বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ১১:৩১ অপরাহ্ন
সাফায়েত খান :: বরিশাল মাধপপাশা ইউনিয়নের হাদিবাস কাঠি গ্রামে জমি সংক্রান্ত পূর্বশত্রুতার জের ধরে বিএনপি নাম’ধারী নেতার ছত্রছায়ায় আপন দুই ভাইকে কু’পি’য়ে গুরুতর জ’খ’ম করেছে প্রতিপক্ষ। এ ঘটনায় এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
আহত মোঃ মিরাজ সরদার (৩৫) ও তার আপন ছোট ভাই মোঃ আবুল বাসার,উভয় ‘মৃত্যু’ হাতেম আলী সরদারের ছেলে।
হা’ম’লার এক পর্যায়ে স্থানীয়’রা তাদের উদ্ধার করে শেরে-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
আহত মিরাজ সরদার বলেন, আমিও আমার ছোট ভাই আবুল বাসার মাধবপাশা বাজার থেকে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা হলে মাঝ পথে আমাদের গাড়ি আটকিয়ে সুমন সরদার,ইব্রাহিম সরদার, মাহাবুব সরদার,রিপন সরদার,সহ-অজ্ঞাত ১৫/২০ জনের একটি দল এসে আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। প্রথমে আমাদের হাতের ফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে যায়। আমরা বাঁধা প্রদান করলে,দেশীয় অস্ত্রও জি-আই পাইপ রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি আগাত শুরু করে।
অপরদিকে গুরুতর আহত আবুল বাসার বলেন,শুধু গাড়ি আটকানো পর্যন্ত আমার মনে আছে,আর কিছু মনে নাই। এই হামলায় তার ডান পা ডান হাত একাধিক স্থানে ভেঙে যায়। এই সন্ত্রাসী হামলায় দেশীয় অস্ত্র রামদা’র কো’পে ডান পায়ের কব্জিতে ক্ষত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, জমিজমা নিয়ে পূর্বের শত্রুতার জের ধরে সুমন সরদারে’র মামা বাবুগঞ্জ উপজেলার বিএনপির আহবায়ক হওয়ায় মামার ছত্রছায়ায় ক্ষমতা’র অপব্যবহার করে এলাকায় ব্যাপক সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করে যাচ্ছে দিনের পর দিন। তাদের ভয়ে সাধারণ মানুষ মুখ-খুলে কথা বলতে পারে না।
ভুক্তভোগী’র স্ত্রী রুমা আক্তার বলেন,এর আগেও তাদের মামা সুলতান খান বাবুগঞ্জ উপজেলার বিএনপির আহবায়ক হওয়ায় তার প্রভাব বিস্তার করে আমাদের বসতভিটা জবরদখল করে। এবং তার মামা’র উপস্থিতিতে, আমার শাশুড়ির উপর অতর্কিত সন্ত্রাসী হামলা করে। রা’ম’দা দিয়ে কো’প দিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে। আমরা পুলিশের দারস্ত হলেও পাইনি থানা পুলিশের সহযোগিতা।
কোন উপায় না পেয়ে আমরা কোর্টে একটি মামলা দায়ের করি। সেই মামলার জের ধরে আমাদের বিভিন্ন সময় জীবন নাশের হুমকি ধামকি দিত এবং সব শেষ আজকে আমার স্বামী ও দেবর তাদের সন্ত্রাসী হামলার কারণে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। তিনি আরো বলেন, এসব কর্ম কান্ডের সাথে জড়িত তার মামা সুলতান খান তার ছত্রছায়ায় এ হামলা হয়। যার ভিডিও সাক্ষাৎকার রয়েছে প্রতিবেদকের হাতে।
নাম প্রকাশ না করার অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন,৫ তারিখ সরকার পতনের পর সুলতান খানের সহযোগিতায় তার ভাগিনা’রা পুরো মাধবপাশা ইউনিয়নে জমি জবরদখল, মা’রা’মা’রি চাঁদা-বাজি অরাজকতা চালাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে থানা পুলিশ ও নিচ্ছে না কোন ব্যবস্থা। ভীত সন্তস্ত জীবনযাপন পার করছেন পুরো এলাকাবাসী। ভুক্ত ভোগী পরিবারসহ এলাকার জনগণ সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছেন। সাথে সাথে পরবর্তী এই ধরনের হীন কৃতকর্ম আর যাতে করতে না পারেন তার জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।
এদিকে অভিযুক্ত সুমন সরদার বলেন, এসব ব্যাপারে কিছু জানেন না তিনি।আরো বলেন উল্টো তারা আমাদেরকে মেরেছে। ইব্রাহিম সরদার, রিপন সরদার, সহ তাদের সহযোগী’দের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে, তাদের ব্যবহৃত মোবাইল নামবার বন্ধ পাওয়া যায়।
অপরদিকে অভিযুক্ত বাবুগঞ্জ উপজেলার বিএনপির আহবায়ক সুলতান খান বলেন আমি এই গ্যাঞ্জাম সম্বন্ধে কোন কিছুই জানিনা। তবে আমার ভাগ্নেদের সাথে তাদের আপন চাচাতো ভাইদের জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন বিরোধ চলছে। এমনকি এটা নিয়ে পাল্টাপাল্টি মামলাও হয়েছে। তিনি আরো বলেন নিউজে আমার কোন নাম দিবেন না প্লিজ !
এ ব্যাপারে এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ জাকির সিকদার বলেন মারামারির পরে ভুক্তভোগী থানায় এসেছিল। চিকিৎসার জন্য শেরে-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।