সোমবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০৭ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:: আজ বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। নির্বাচন ঘিরে নগরীতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহারের লক্ষ্যে প্রশাসন তৎপর রয়েছে।
এদিকে ভোটগ্রহণের ৩২ ঘন্টা আগে বিধিঅনুযায়ী শেষ হয়েছে সকল প্রচার প্রচারণা। এবারের বিসিসি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী ৭ জন রয়েছে।
এর মধ্যে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুফতি ফয়জুল করিম, জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস, জাকের পার্টির প্রার্থী রয়েছে মিজানুর রহমান বাচ্চু। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে তিনজন। এরা হলেন বিএনপি সমর্থিত সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালের ছেলে ঘড়ি প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপন, হরিণ প্রতীকের আলী হোসেন হাওলাদার ও হাতি প্রতীকে লড়ছেন সাংবাদিক আসাদুজ্জান।
বিজয়ের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে নগরবাসীকে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে মেয়র প্রার্থী ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা প্রচারণায় ইতি টেনেছেন।
এবারে মেয়র পদে কে নির্বাচিত হচ্ছেন সে নিয়ে রয়েছে নানা জল্পনা কল্পনা। তবে নগরবাসীর প্রত্যাশা উন্নয়নের। সে লক্ষ্যেই তারা প্রার্থী বাছাই করে নিবেন। এক্ষেত্রে কে হচ্ছেন নগর সেবক বা নগরপিতা সেটা নিয়েই এখন কৌতুহল বিরাজ করছে সর্ব মহলে।
নির্বাচনের চারদিন আগে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত তার নির্বাচনী ইশতেহারে ৩৫ দফা ঘোষণা করেছেন। ইশতেহারে অন্যতম ঘোষণা ছিল নগরবাসী ওপর থেকে ট্যাক্সের বোঝা কমানো। এ ছাড়াও কাঠামোগত উন্নয়ন ও সেবামূলক কার্যক্রম, পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নে সেবার মান বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যসেবা, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, যানজট নিরসনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
হাতপাখা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ইশতেহারে ১৭ দফা উল্লেখ করেছেন।
তার নির্বাচন ইশতেহারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন, স্বচ্ছতা আনয়ন, জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ, নগরবিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন, নগর সরকার গঠনে কার্যকর উদ্যোগ, পানি সমস্যার সমাধান, খাদ্যে ভেজাল নিয়ন্ত্রণ, ওয়ার্ডভিত্তিক পরিকল্পনা ও মাতৃসদন প্রতিষ্ঠার ওপর।
এছাড়া অন্যান্য প্রার্থীরা নানামুখী উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইশতেহার ঘোষণা করেছেন।
এদিকে নির্বাচন ঘিরে গোটা নগরীজুড়ে নেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
প্রথমবারের মত এবার বরিশালের সবগুলো কেন্দ্রে ইভিএম মেশিনে ভোট গ্রহণ হচ্ছে জানিয়ে৷ রিটার্নিং কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, ইভিএমএ ভোট দেয়ার বিষয়ে প্রতীক বরাদ্দের পরই প্রতিটি ওয়ার্ডে একটানা ভোটারদের প্রশিক্ষন দেয়া হয়েছে। এতে ভোটরদের মাঝে বেশ আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে, পাশাপাশি তাদের ব্যপক সারার কারনে নির্ধারিত সময়ের বেশি থেকেও প্রশিক্ষন দিতে হয়েছে আমাদের। ফলে আশা করছি কেন্দ্রে ভোটার সমাগম ঘটবে এবং সুষ্ঠু পরিবেশে তারা ভোট দিতে পারবে।
তিনি বলেন, ১২৬ টি কেন্দ্রের ৮৯৪ টি বুথের জন্য দেড় হাজার ইভিএম মেশিন রাখা হয়েছে। সকাল থেকে ইভিএম মেশিনসহ নির্বাচনী সামগ্রী প্রিজাইডিং অফিসারদের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে। বুঝে নেয়ার পর আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সাথে স্ব স্ব কেন্দ্রে চলে যাবেন প্রিজাইডিং অফিসাররা। এছাড়া ১২৬ টি ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রায় ১২শ সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
আর গোটা বিসিসি নির্বাচনী এলাকাকে নিরাপত্তার চাঁদরে ঢেকে ফেলতে সাড়ে ৪ হাজার আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার মোঃ সাইফুল ইসলাম।
যেখানে অপরদিকে প্রতি কেন্দ্রে ১২ জন করে আনসার সদস্য মিলিয়ে ১ হাজার ৫১২ জন অনসার সদস্য কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করবে বলে জানানো হয়েছে। এছাড়া র্যাবের ১৬ টি টিম স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেব মাঠে কাজ করছে।
এর পাশাপাশি দশ প্লাটুন বিজিবি, ৩০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং দশ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানিয়েছেন জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন।
এদিকে সকাল থেকে বরিশাল নগরের প্রতিটি মোড়ে মোড়ে টহল পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে। নগর জুড়ে বিজিবির টহল অব্যাহত রয়েছে। বহিরাগতদের নগরী ছাড়ার জন্য কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে প্রশাসন। তবে নির্দেশনা উপেক্ষা করে বহিরাগত জারা এখনো অবস্থান করছেন তাদের বিরুদ্ধও ব্যাবস্থা নেয়া হবে বলে জানায় পুলিশ
উল্লেখ্য, এছাড়া সিটি নির্বাচনে ১০টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৪২ জন, এছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১৮ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করেছেন। দুই লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন ভোটার এবার ভোট প্রদান করবেন।