বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৭:৪৫ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক :: পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলাকে বলা হয় জাতীয় পার্টির (জেপি) আঁতুড়ঘর বা দলটির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর ঘাঁটি। পিরোজপুর-২ (ভাণ্ডারিয়া-কাউখালী-ইন্দুরকানী) আসনে আটবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন বর্ষীয়ান এ রাজনীতিবিদ। গত ৪০ বছরে মঞ্জু যে প্রতীক নিয়ে মাঠে নেমেছেন, সেটিই জয়ী হয়েছে। অথচ ভাণ্ডারিয়া পৌরসভার প্রথম নির্বাচনে বড় ব্যবধানে হেরেছেন জেপি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী মহিবুল ইসলাম মাহিম। তিনি আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর চাচাতো ভাই। বিপুল ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী ফাইজুর রশিদ খসরু।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ভাণ্ডারিয়া পৌর নির্বাচনে সাইকেল প্রতীকের মাহিম ও নৌকা প্রতীকের খসরু ছিলেন দৃশ্যমান প্রার্থী মাত্র। নেপথ্যে লড়েছেন স্থানীয় এমপি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এবং জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মহিউদ্দিন মহারাজ। তাদের মর্যাদার লড়াইয়ে ছোট এই পৌরসভায় গতকাল সোমবার বড় উত্তাপের নির্বাচন হয়েছে। মঞ্জুর জামাতা যুবলীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ফরিদপুর-৪ আসনের এমপি মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরীর গত ৯ জুলাই ভাণ্ডারিয়া সফরকে কেন্দ্র করে শোডাউন নির্বাচনী উত্তাপ আরও বাড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া চাচাতো ভাইকে ভোট দিতে গত ১২ জুলাই থেকে ভাণ্ডারিয়ায় ছিলেন মঞ্জু নিজেই।
গতকাল সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ইভিএমের মাধ্যমে ভাণ্ডারিয়ায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী খসরু ৯ হাজার ৬২৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হন। মাহিম পেয়েছেন মাত্র ৫ হাজার ৭১ ভোট। এ ছাড়া নির্বাচিত কান্সিলররা হলেন ১ নম্বর ওয়ার্ডে ছিদ্দিকুর রহমান, ২ নম্বর ওয়ার্ডে টিপু তালুকদার, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে আহাদুল ইসলাম খান, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে আব্দুল কাদের হাওলাদার, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে শাহীন মুন্সী, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে দেলোয়ার সিকদার, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে জাহাঙ্গীর হোসেন, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে মো. মিলন এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়াস উদ্দীন। নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
জানা গেছে, ভোট দিয়ে গতকাল বিকেলে যখন এমপি মঞ্জু ভাণ্ডারিয়া ত্যাগ করেন, ততক্ষণে অধিকাংশ কেন্দ্রের ফল প্রকাশ হয়ে গেছে। পৌরসভার ৯টি কেন্দ্রের মধ্যে একমাত্র মঞ্জুর বাড়িসংলগ্ন মজিদা বেগম মহিলা কলেজ কেন্দ্রেই সাইকেল প্রতীক নৌকার চেয়ে ১৯২ ভোট বেশি পেয়েছে। বাকি সব কেন্দ্রেই হয়েছে ভরাডুবি।
মহাজোট সরকারের সময় মঞ্জু মন্ত্রী থাকাকালে তাঁর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ছিলেন মহারাজ। স্থানীয়রা বলছেন, তখন ধনাঢ্য বনে যাওয়া মহারাজ এখন মঞ্জুর শক্ত প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছেন। তাঁর সঙ্গে যোগ দিয়েছেন মঞ্জুর অনেক রাজনৈতিক কর্মীও। পৌর নির্বাচনে তারা প্রকাশ্যে সাইকেলের বিরোধিতা করেছেন।